রাতুলের বিড়ম্বনার যাত্রা (পর্ব -7) শিশির আহাম্মেদ খান
রাতুলের বিড়ম্বনার যাত্রা
এয়ারপোর্ট রেলস্টেশনে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেল , পেটে ভীষণ ক্ষু’ধা । যাই হোক আজকে আর পা চলছে না । ভীষণ ক্লান্ত শরীরের শান্তির ঘুম চাচ্ছে । কিন্তু সে ঘুম এখন কি হবে ? যে ঘুম ঐ অট্টালিকার ভেতরের মানুষ গুলো দেয় । সেই ঘুম হয়ত আজ হবে না , তবে চেষ্টা করতে দুশ কি । রাজু ছেলে টার জন্য খুব খারাপ লাগছে । সে কিন্তু পকেট মার না । নেশাগ্রস্ত হওয়ার কারণে আজ এই দুর অবস্থা । কত ছেলে পুলে দের কে যে সে খাওয়াত। বাবা মার একমাত্র সন্তান, মাসে ১০/১২ হাজার টাকা পাঠাতো রাজুর বাবা , কিন্তু এত টাকা খরচ করত অন্য দের কে খাওয়ানোর মাধ্যমে । আজ কোথায় সে ,শুনেছি ওর বাবা হার্টের অসুখে মারা গেছেন। বেচারা একমাত্র ছেলের এই অবস্থা দেখে সহ্য করতে পারে নাই । একদিন ক্যা’ম্প এ তার সাথে দেখা দক্ষিণ গেইট দিয়ে বের হচ্ছিল , বন্যা মেয়েটার হাত ধরে । মেয়েটা দেখতে শ্যাম বর্ণের হলেও সু-শ্রী । যে কেউ দেখলেই প্রেমে পড়ে যাবে । তার দুই দিন পরে লাইব্রেরিতে অন্য একটা ছেলের কাধে মাথা রেখে বসে কথা বলছে । আমি অনেক টা বিব্রত হয়ে গেলাম। মেয়েটা কে কি ভাবব তা ঠিক করতে পারছি না।
ছেলেটি কথার ছলে কিছ করছে , চুলে হাত বোলাচ্ছে, চোখে চোখ রেখে কথা বলছে ত বলছে । কিছুক্ষণ পর ওরা চলে গেল । কি আশ্চর্য মেয়ে দের মন , এক সাথে বহু ছেলে কে করে যায় আলিঙ্গন।
ভাই ! এই ভাই ! জায়গা ছাড়েন ঘুম পাইছে ...
রাতুল :- কে ? কে ? কে ? ও কি তাকাতেই কি বিকট চেহারার একটা মুখ সামনে ! কিছু একটা বুঝার আগে সে কর্কশ কন্ঠে উত্তর দিল...
লোক :- সেই টা জানার দরকার নাই , জায়গা ছাড়েন , ঘুম পাইছে ।
রাতুল :- সাইডে অনেক জায়গা আছে , আপনি শুয়ে থাকেন।
লোক :- আরে ভাই এই জায়গা আমার, আমি পাঁচ বছর দইরা ভাড়া দিয়া থাকি ।
রাতুল :- ও য় , কত টাকা ভাড়া দেন প্রতি রাতে ?
লোক :- সেই কথা আপনার জানার দরকার কি ?
রাতুল :- না মানে , জানলে ভালো হত !
লোক :- আপনার ভালো দিয়া আমার কি হয়ব ।আমার এহন ঘুম পাইছে ।
রাতুল :- আচ্ছা ঠিক আছে , আপনি ঘুমান।
লোক :- কই যান মিয়া বহেন, কতা কই...
রাতুল :- কি কথা বলবেন ?
লোক :- কই যাইবেন, রাইত মেলা হয়ছে ,
রাতুল :- সমস্যা নাই, আমি চলে যাব।
যাইবেন কেমনে ? বগ- ডাউন চলতেছে , গাড়ি চলে না।
রাতুল :- কি আচার্য, লোকটা বলল ঘুমাবে ! এখন বলছে গল্প করবে । শরির টা খুব ক্লান্ত লাগছে তার পরেও এই উদ্ভট চেহারার লোকের সঙ্গে বসে কথা বলতে হবে । এ যেন পুলিশ রিমান্ডে মতন, কি আর করার , এখন তার সাথেই কিছুক্ষণ কথা বলে কাটিয়ে দেই ।
Comments