বট গাছের ভুত - শিশির আহাম্মেদ খান

বট গাছের ভুত 

শিশির আহাম্মেদ খান ।


একশ বছর আগের এক বিশাল বট গাছ বড় রাস্তার থেকে একটু দূরে । জায়গাটা দিনের বেলাতেই কেমন যেন সুনসান গা ছমছম নিরবতা ।
রাত হলেই জায়গাটা হয়ে ওঠে ভয়ংকর রকম অসাভাবিক  । স্থানীয়দের  মাঝে এই বট গাছনিয়ে ভয়ংকর সব গল্পের ডাল পালা ।
আবির, আকাশ, অর্ক আর নায়না পথ হারিয়ে অচেনা একটা গায়ে চলে যায়।
আবির :- এই পথেই গিয়েছিলাম মনে হয় ।
অর্ক  :-  কিন্তু আমার কাছে অপরিচিত লাগছে পথ
            টা .....
নায়না  :- সন্ধ্যা হয়ে এল , তাড়াতাড়ি চল  আমার
               খুব ভয় লাগছে।
আকাশ  :- আরে দুর আমরা আছি না , শুধু শুধু     
                ভয় পেলে হবে ।
অর্ক      :- আমার ও ভয় ভয় লাগছে , দাদুর কাছে শুনছিলাম এই রকম নির্জন পথের ধারে বড় বড় গাছ গুলোতে নাকি অতৃপ্ত আত্মারা ঝুলে থাকে আর অপরিচিত পথচারীদের ভয় দেখায়। অনেকে মেরে ও ফেলে ।

আবির :- আরে ধুর  এই সব ভোগাছ কথা । ভুতটুত বলতে কিছু নাই। আমি এই সব ভুতে বিশ্বাস করি না ।
অর্ক  :- ভুত হোক আর পেত্নী হোক আমার ভয় লাগে ।
আবির  :- যদি পেত্নীর দেখা মিলে ,তবে ধরে এনে তোর সাথে বিয়ে দিব । হা হা হা.... ( বাতাসে প্রতিধ্বনি হয়ে সে হাসি মিলিয়ে গেল )

নায়না  :- ও মা মনে হল পিছনে কেউ ভয়ংকর ভাবে শব্দ করে ডাকছে ।
আবির  :- আরে পাগল এই সব তোর মনের ভুল চিন্তা । ঐ সব কিছু নেই । আর যদিও থেকে থাকে সামনে আসার সাহস পাবে না ।
রাস্তার পার্শ্বে ১০০ বছর পুরনো বট গাছের তলে আসতেই সবাই হাঁপিয়ে উঠল  ।

আবির  :- বন্ধুরা অনেকটা পথ হেটে আসলাম বড্ড ক্লান্ত লাগছে , চল একটু জিরিয়ে নেই।
আকাশ   :- চল , আর হাটতে পারছি না।
অর্ক  :- কিন্তু অনেক রাত হয়ে যাবে । তার আমরা আর একটু সামনে আগায়ে গেলে ভালো হয়।
নায়না  :- আমার কিন্তু অনেক ভয় লাগছে । এ খানে বিশ্রাম করা উচিত হবে না ।
আবির  :- দুর যত্ত সব ।
(বসে পড়ল আবির, পিছন পিছন আকাশ আর অর্ক ত বসে পড়ল । নায়না কি করবে বুঝে উঠতে পারল না।)


একটা অভয়ব আড়াল থেকে তাকিয়ে দেখছে ওদের । ভয়ংকর চেহারা সেই অভয়বের। মুহূর্তেই মিলিয়ে গেল সেই অভয়ব ।
নায়না কিছু একটা দেখে ভয়ে আতকে উঠল।
নায়না  :- ভুত ভুত ভো ও ত .....
আবির  :- কোথায় ভুত, এখানে ভুত টুত নাই।শুধু শুধু  ভয় পাওয়ার কোন মানে হয় ....
নায়না :- সত্যিই বলছি , কিছু একটা দেখেছি ...খুব ভয়ংকর ছিল সেটা ।
আবির  :- সে তোর মনের ভুল , ভুত নাই এখানে ।
নায়না   :- কিন্তু ?
আবির  :- কোন কিন্তু ফিন্তু নাই,  কোথায় একটু জিড়িয়ে নিব আর তুই শুরু করেদিলি ভুতের কথা ।

আকাশ অদৃশ্য হয়ে গেল,  এদিকে সবাই খুঁজছে।
অর্ক:- আকাশ আবার কোথায় গেল ? ওকে কিছুক্ষণ ধরে খুঁজে পাচ্ছি না ।
নায়না  :- বলিস কি  ? আমার খুব ভয় লাগছে , চল এখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে যাই। 
আবির  :- আকাশ মনে হয় এইদিকে কোথাও আশেপাশে আছে । চল আমরা ওকে খুঁজে দেখি।
নায়না :- আমার কিন্তু খুব ভয় করছে , আমি এইখান থেকে চলে যাব । এক মুহূর্তের জন্য এই খানে থাকব না । ( নায়না পড়ে গেল , মনে হলো কেউ পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিছে । বট গাছের ডাল পালা নড়তে লাগল , মনে হচ্ছে ঝড় বয়ে যাচ্ছে।)

আবির কে অদৃশ্য হতে কে যেন গলা চেপে ধরেছে । অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু ছাড়াতে পারছে না ।
বট গাছের ডালে ঝুলে আছে আবির। এই সব দেখে অর্ক আর নায়না ছুটতে লাগল । নায়না কাঁদছে অজোরে । তার পড়ে ও ছুটছে , হঠাৎই  নায়না জ্ঞান হারিয়ে ফেলল । যখন সে চোখ খুলে তাকাল ,তখন নিজেকে তার রুমে নিজের বিছানার মধ্যে দেখতে পেল ।

Comments

Popular posts from this blog

অজেয় তারুণ্য / শিশির আহাম্মেদ খান

রক্ত গঙ্গা / শিশির আহাম্মেদ খান

White - Shishir Ahmed Khan